আশরাফুল ইসলাম রনজু রাজশাহী প্রতিনিধিঃ বহিস্কারাদেশ মাথায় নিয়েই জেলার ৩টি পৌরসভায় মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী। আর একটিতে বিএনপি ও ৭টিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন। ৭টিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা মেয়র নির্বাচিত হলেও অধিকাংশতেই তাদের মূল প্রতিদ্বন্দ্বি ছিলো দলের বিদ্রোহী প্রার্থীরা।
এমনকি প্রতিটি পৌরসভায় এমপি গ্রুপ আর সাবেক জেলা সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ গ্রুপের মধ্যে বিরাজমান দ্বন্দ্ব স্পষ্ট হয়ে ওঠেছে। এই দ্বন্দ্বের জেরে কোথাও কোথাও দলীয় প্রার্থীরা বিদ্রোহীদের কাছে ধরাশায়ীও হয়েছেন। সাবেক জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ কাকনহাট পৌরসভায় নৌকার পক্ষে প্রচারণায় অংশ নেন। কিন্তু তানোর উপজেলার মুন্ডমালা পৌরসভায় দেখা মিলেনি। এখানে আসাদ অনুগত তানোর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম রাব্বানী ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন নৌকার বিরুদ্ধে ভোট করার অভিযোগ করেছেন মুন্ডমালা পৌরসভায় নৌকার মেয়র প্রার্থী আমির হোসেন আমিন। মুন্ডমালা পৌরসভায় নৌকার বিদ্রোহী হিসেবে ৬১ ভোটে জয়ী হওয়া সাইদুর রহমানকে নিয়ে সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান রাজশাহী নগরীতে আমরা শেখ হাসিনার লোক এই ব্যানারে মিছিল করতে দেখা যায়। এতে করেই বোঝা যায় আসাদ নৌকা ডোবাতে তৎপর ছিলেন।
রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানী পৌরসভায় মেয়র পদে নির্বাচিত হয়েছেন বিস্ফোরক মামলার আসামি আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মুক্তার আলী। তিনি দলীয় প্রার্থী শহিদুজ্জামান শাহিদকে পরাজিত করে দ্বিতীয় বারের মতো মেয়র নির্বাচিত হন। নির্বাচনের মাত্র একদিন আগেই দলের নেতাকর্মীদের ওপর হামলার ঘটনায় তাঁর বিরুদ্ধে বিস্ফোরক আইনে মামলা হয়েছে। ওই মামলায় তিনি পলাতক থেকেই বিভাগীয় কমিশনারের কাছে গিয়ে শপথ নিয়েছেন। আবার শপথ নেওয়ার একদিন পরেই দলীয় নেতাকর্মীদের ওপর তাঁর লোকজন সশস্ত্র হামলা চালিয়েছে। এসময় আড়ানী পৌর যুবলীগের ৯ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি আজিবর রহমানের ডান পা ভেঙে দেওয়া হয়। তিনি এখনো রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এখানে স্থানীয় প্রভাবশালী এক নেতার বিরুদ্ধে দলীয় প্রার্থীর বিপক্ষে কাজ করার অভিযোগ নিয়ে একাধিক জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকাতে বিশ্লেষণমূলক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
আওয়ামী লীএদিকে সর্বশেষ গত রবিবার (১৪ ফেব্রয়ারি) রাজশাহীর গোদাগাড়ী পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র মনিরুল ইসলাম বাবু দলীয় প্রার্থী অয়েজ উদ্দিন বিশ্বাসকে পরাজিত করে দ্বিতীয় বারের মতো মেয়র নির্বাচিত হন। বাবু পেয়েছেন ৮ হাজার ৮১৫ ভোট। কিন্তু অয়েজ উদ্দিন বিশ্বাস পেয়েছেন মাত্র ৪ হাজার ১৪ ভোট।
অয়েজ উদ্দিন বিশ্বাসের পক্ষে গোদাগাড়ী পৌরসভা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পদক রবিউল আলম , গোদাগাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের অব্যাহতি পাওয়া সভাপতি বদিউজ্জামান আওয়ামীলীগের বিদ্রোহীর পক্ষে কাজ করেছেন। বিএনপির প্রার্থী গোলাম কিবরিয়া রুলু পেয়েছেন ৬ হাজার ৭৯৩ ভোট। ফলে এখানে নৌকার ভরাডুবি হয়েছে বিদ্রোহী প্রার্থীর কাছে।
অন্যদিকে একইদিনে জেলার নওহাটায় পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হাফিজুর রহমান হাফিজ মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি ভোট পেয়েছেন ১৪ হাজার ৪৫১ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি বিদ্রোহী প্রার্থী আব্দুল বারি খান পেয়েছেন ১৩ হাজার ৯৮৬ ভোট।